Sunday, March 17, 2024

ডাক হরকরা

গুয়াহাটি থেকে প্রকাশিত 'দৈনিক যুগশঙ্খ' কাগজে আমার একটি কবিতা , "ডাক হরকরা" । পড়ুন এখানে .... 

।। ডাক হরকরা ।।
নীলদীপ চক্রবর্তী

 
সকল উপকথার নেপথ্যে
একটি প্রসস্ত সংগ্রাম থাকে
থাকে একটি গোলাপ বাগান
ফুল তুলতে গিয়ে
ছড়ে যেতে থাকে মসৃন ত্বক
কাঁটার সুচাগ্রে বিন্দু রক্ত
জমাট করে রাখে নেপথ্য পাণ্ডুলিপি
উপকথার গল্পগাথা
ডানায় নিয়ে রাজহাঁস উড়ে যায়
সকল সংগ্রাম ডানায় ভর করে
আবহমান পৌঁছে যায়
আসন্ন বিপ্লবের কাছে !

গতি দৈনিক পত্রিকায় 'সেতু'

 শিলচর থেকে প্রকাশিত গতি দৈনিক কাগজে 17 মার্চ আমার একটি প্রকাশিত কবিতা পড়ুন এখানে 

সেতু
। নীলদীপ চক্রবর্তী ।
অনেকেই দাঁড়িয়ে এক
স্বপ্নিল সেতুর নিচে
তার প্রলম্বিত ছায়া
কখন মুখ ঢেকে দিয়েছে
হতবাক নিঃশব্দ মানুষের
বিকিরিত ঔজ্জল্যের সাথে
অবিরত পুষ্পবৃষ্টি সেতুর ওপর
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সেতুশিল্পী
পরিযায়ী শ্রমিক
সুদর্শনের বাস্তুকার
আহা আনন্দময়-
প্রতিটি তীক্ষ্ণধি মস্তিস্ক
প্রতিটি অনুগত হৃদয় !
পরিকল্পিত সুশাসনের
যথার্থ পরাকাষ্ঠা নিয়ে
সগর্ব দাঁড়ায় এক
নিথর , নিষ্ঠুর সেতু !
বহুদূর, নীরবে দৃষ্টি মেলে
প্রাচীন মাঝি , খসে গেছে
পায়ের কাছেই তার -
সদ্য ঘুনে ধরা বলিষ্ঠ দাঁড় !

Thursday, April 27, 2023

কীর্ণকাল কাগজে কবিতা

ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত 'কীর্ণকাল' কাগজ সম্পাদনা করেন চিরশ্রী দেবনাথ । এই সংখ্যায় পড়ুন আমার একটি কবিতা ।

পলকা মেঘের ঘরবাড়ি

প্রতি রাতে ছদ্মবেশে থাকি সকলেই

রাত-ভোর জানালায় অনন্ত প্রতীক্ষার মানুষ মূর্তিগুলি 

ষোলতলা ইমারত, সর্বোচ্চ শিখর থেকে

ঝরে পড়ে সহস্র কাঙালপনা!

একে একে গুহার ছায়াদেয়ালে

পর্যাপ্ত সরীসৃপ ভরে উঠলে

ব্রাত্য সকলেই পাইপলাইন বেয়ে নামে ভূগর্ভ মন্ডলে

তাঁদের এক রূপকথার দুনিয়া আছে

নেতা, হাকিম, চতুর, গোবেচারা

সকল পেশার সমাহারে

যারা অভিনেতা শুধু তারাই ক্রমে খুলে রাখছে

আত্ম-সচেতনতা, শিল্পবুদ্ধিহীন নিরেট মাথাটুকু

ফ্ল্যাটবাড়ির নির্জীব মোহনায় বসে ক্ষুদার ঈশ্বর

অপলক চেয়ে থাকে অমৃত-মন্থন পানে-

সভ্য বিনয়ী সংযত কুকুর সকলেই

সুগভীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে বসে সর্বহারাদের পাশে

বাসস্থানের কলেবর বেড়েছে, পরিসর ফেঁপে উঠছে ক্রমে

শুধু তীব্র লজ্জাকে উপেক্ষা করে

মানুষের খোলা বুক সংকুচিত হয়ে চলেছে

বাঁধ ভাঙ্গা এলইডি আলো

আলোকের সমূহ বন্যায় ভাসে ইমারত

শুধু অনন্ত প্রতীক্ষার মানুষগুলি রাতভর জানালায়  

দুহাতে অন্ধকার চেটেপুটে খায়

দুহাত দিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মাটির ওপর

বড় নিদারুন সেই পড়া, সিঁদুরে মেঘের ভয়

অসংখ্য দমকল মজুত করি আমরা প্রতিদিন

খুঁজে চলি একটি আপাত বিশ্বাসী কাঁধ

যেখানে মাথা, মুখ, হাত আলগোছে নামিয়ে রাখা যায়!    

      **************  

   



Saturday, March 11, 2023

একটি প্রাক শীতের রাত ও ‘তিমির তীর্থ’


 শীতের রাতগুলি আসার কয়েকদিন আগে এক বন্ধুর সাথে রাতে হেঁটে ফিরছিলাম খগেশ্বর রোড দিয়ে। নিতান্ত ঘরোয়া সাজে অধ্যাপক সুশান্ত কর তাঁর আবাসনের নিচে এসে নিজের গাড়ি থেকে কিছু কাগজপত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি নয়, তিনিই আমাকে হঠাৎ আধো অন্ধকারে আবিষ্কার করলেন আর একপ্রকার টেনে নিয়ে গেলেন ওর ভদ্রাসনে। তিনি ঐখানে না থাকলে আমি যে আবারও তার বাড়িতে যাওয়া এড়িয়ে যেতাম তা যেমন তিনি জানতেন, আমিও! সেই লজ্জা লুকোবার চেষ্টায় কান পর্যন্ত হাসি তুলে তাঁর বাড়িতে ঢুকে দেয়াল ঘড়িতে দেখি রাত দশটা। এমন রাতে ‘তিমিরতীর্থ’ হাতে তুলে দেবার মতো উপযুক্ত বই বটে। চিন্তাবিদ ও কথাশিল্পী হোমেন বরগোহাঞির এই উপন্যাস অনুবাদ করেছেন সুশান্ত কর। অসমীয়া সাহিত্যের মনিমুক্তা থেকে বাঙালি পাঠক যাতে ব্রাত্য থেকে না যান সেই কথা মাথায় রেখে সুশান্ত ইতিমধ্যে আমাদের কিছু জরুরী অনুবাদ উপহার দিয়েছেন । অসমের সচেতন বাঙালি পাঠক মাত্রেই তা জানেন। অরূপা পটঙ্গীয়া কলিতার ‘ফেলানি’র মতো দীর্ঘ উপন্যাস অনুবাদ করে সুশান্ত আমাদের এক বেদনার্ত দলিলের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন । গুয়াহাটির বিকি পাবলিশার্স বইটি ছেপেছিল।

বর্তমানের যে বইটি সুশান্ত আমাকে দিলেন সেটি অসমের সকল সংগ্রামী, বিপ্লবী বা আপোষহীন যত ব্যক্তিত্ব আছেন তাঁদের পড়া উচিত। এই আলোচনা যদিও হোমেন বরগোহাঞির সাহিত্যের নয়, কিন্তু সেসবের সবগুলি কালজয়ী না হলেও জনসাধারণের মানসিক ও বৌদ্ধিক উন্নতির জন্য অপরিহার্য। আমি বলছিলাম অনুবাদকর্মের কথা। মূল গল্পটিকে অনুবাদ করার সময় সুশান্ত স্যার এক অদ্ভুত মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। উপন্যাসে গল্পের খাতিরে মার্ক্সতত্বের বিশ্লেষণ এসেছে। এসেছে কাছাকাছি সম্পর্কগুলির মধ্যে টানাপোড়েন, রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত, ইত্যাদির সঙ্গে ক্রমাগত মানসিক যুদ্ধ করতে থাকা কিছু মানুষের ঘাত প্রতিঘাতের কথা। নতুন বা অল্পবয়স্ক পাঠক যাতে বিভ্রান্ত না হন সেসব দিক নিয়ে ভেবেই সুশান্ত সহজ এবং উপযুক্ত বাংলা শব্দচয়ন করে গল্পটিকে বুনে গেছেন, সমূহ নতুন পাঠকদের জন্য প্রাঞ্জল ও বোধগম্য করে। এখানেই এই বইটির অনুবাদ নজর কেড়ে নেয়। এবং অবসম্ভাবীইভাবেই অনুবাদ হয়ে উঠে অনুসৃষ্টি ।যারা ‘তিমির তীর্থ’ পড়েননি তারা এটি পড়ুন এবং দেখুন ১৯৭৫ সালে প্রথম প্রকাশিত এই উপন্যাসের উপজীব্য কেমন আজও প্রাসঙ্গিক। ছোট এই বইটির প্রচ্ছদ কল্পনা আমাদের সুহৃদ রেখাচিত্রশিল্পী ত্রিদিব দত্তর। তিনি গল্পের প্রতি সুবিচার করে এই প্রচ্ছদ নির্মাণ করেছেন, যদিও পাঠকহিসেবে কভারে লাল রঙের উল্লেখ সামান্য থাকলে ভাল হতে বলে আমাদের মনে হয়েছে।
তিনসুকিয়া কলেজ এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। বাংলা লেখালেখির প্রকাশক বা ব্যবসা অসমে দুর্লভ এ কথা সর্বজনবিদিত। সেই সময় দুটি বাংলা বই (‘অথবা’ শিরোনামে হেমাঙ্গ কুমার দত্তর অসমীয়া কবিতার বাংলা অনুবাদকর্ম যা করেছেন আবার ঐ অধ্যাপক সুশান্ত কর) ছেপে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায়িত্বশীলতার অসাধারণ উপমা তুলে ধরেছেন। সাম্প্রদায়িক সদ্ভাবনা, বিভিন্ন ভাষা-সংস্কৃতির সহবস্থানের ক্ষেত্রে এটি এক উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। দি আসাম কম্পিউটারস মুদ্রণ ও বাঁধাই করেছে সুদৃশ্য ও প্রায় নির্ভুল।
অনুবাদকের সাথে যোগাযোগ ছাড়া বইটি পড়ার আর কোনো উপায় আমার জানা নেই।
যেহেতু সেদিন রাত দশটা বেজে গিয়েছিল তাই অফার করার পরেও চা আর বৌদির হাতের বিখ্যাত ডিমের অমলেট আমাকে প্রত্যাখ্যান করে উঠতে হয়েছিল এবং সেসব কিছুর ক্ষতিপূরণ ‘তিমির তীর্থ’র নিবিড় পাঠ আমাকে পুষিয়েছে!

Sunday, March 5, 2023

কবি হবার সহজপাঠ

 ধর্মনগর, ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত "পাখি সব করে রব" কবিতা পত্রিকায় আমার একটি কবিতা, এটির সম্পাদক পীযুষকান্তি দাস বিশ্বাস ।



One of my poems published in "Pakshi Sob Kore Rob" , a magazine of poetry from Dharmanagar , Tripura. The editor of the same is Piyush Kanti Dasbiswas.

একটি কবিতার জন্ম ও মৃত্যু

 ত্রিপুরা আগরতলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বজ্রকণ্ঠ পত্রিকার ১৭০৭ তম সংখ্যায় আমার একটি কবিতা, পড়ুন এখানে। রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ এটি সম্পাদনা করে চলেছেন খুব নিষ্ঠার সঙ্গে ।




।। নীলদীপ চক্রবর্তী ।।
সুপ্রাচীন পাহাড় ভেদ করে পাথরের
জমে থাকা স্তুপ, দাঁড়িয়েছে পাঠোদ্যত
এক প্রবীণ কবির মতো! আর তার
পাশেই পাতাল খুঁড়ে ঢুকে যাচ্ছে
সুগভীর খাদ, বিশাল পাথর
সঙ্গে সুপ্ত প্রাগৈতিহাসিক দেবতার চকমকি
যেন ঠুকে ঠুকে আগুন ফুলকি তোলেন
শীতের কুয়াশা ঘেরা রাতে! বিষন্ন
নায়েগ্রার জলে নামে কবিতার সফেন
পংক্তি! সিক্ত করে মৌনী গোবির
তপ্ত বালুরাশি।
আহা কি মুক্তোর লালি
ইউরোপিয়ান উইলোর নন্দন জঙ্গলে।
পাথরের গোপন আগুন কবি ও দেবতার
হাতে, ঝাঝালো অথবা স্নিগ্ধ তাপে
অনায়াস পোড়ায় প্রাচীন গভীর জঙ্গল
গোবির বঙ্কিম পিঠে চলে শ্লথ সরীসৃপ
জিপসী ক্যারাভান! যাযাবর গান পানে
কবিতা মাতাল হয়। তখন উটের পিঠে
রাত্রি গভীর হয়। ভাঙ্গা নক্ষত্রের ছায়া
ছড়ায়, অমিত্রাক্ষর কবিতার কমনীয় দেহে।
দেহ থেকে ঝরে পড়ে ক্যাকটস
মনসার সূঁচল কন্টক, অবাধ্য পাথরের
স্তুপ। আরাকানের গুড়ো মেশে গোবির
বালিতে!
দূর থেকে স্বর ভাসে, আসে আলেয়া ইশারা
নায়েগ্রার গান গায় মৃত্যু কোলাহল
তৃতীয় প্রহরে, নিশিযাম বয়ে আনে
কবিতার দেহ। নক্ষত্রেরা শব নিয়ে
যায়। দূরে, উত্তরে, আরো উত্তরে!
তুষারের শৃঙ্গে শৃঙ্গে নৈ:শব্দ্য প্রবল
কবি এক অশীতিপর শৃঙ্গে দাঁড়ানো
তার কণ্ঠ ইস্পাত কঠিন, হিমবাহধারায় –
শীতল মৃত্যুর মতো নিরেট কবিতা
এইভাবে পরবাসে কবিতা লালিত হয়
সমৃদ্ধ যাপনে! কখনো ভাবনা
রজ:স্বলা হয় আর নিঃশব্দ ধারায়
শব্দ ঝরে পড়ে, কান্দাহার মালভূমির
বিজনে!
সেখানেও কবি যান
সঙ্গে নিয়ে কিছু নির্বাক কিশোর
তাঁদের কণ্ঠ ও দৃষ্টিদান হয় দিগন্তে
ফোঁটা কাঁটাফুল আর বিচ্ছিন্ন মর্মরের
গালিচায় বসে, আলতামিরার গুহাবাসী!
তারাও কবিতার লাইন, তারাও বাত্সায়নের বই;
ওদের সন্ধ্যা ঝরে পড়ে – কবিতার নিভৃত আকাশ
থেকে ! ভেসে ভেসে গোলার্ধ ঘোরেন কবি
সন্মুখে উচ্ছাসিত ফেনিল জলরাশি
চকিতে লাফ দিয়ে কবিতা নামে –
জলের বিছানায় – অমরত্বর স্বর্গীয় নেশায়
সমুদ্রের শেষ নক্ষত্রের সাথে, মহাকাশে!
*******

রিফিউজি - কবিতা

One of my poem published in "Shabdo Nirantar" magazine published from Hailakandi. The editor of the paper is Nihar Debnath.

হাইলাকান্দি থেকে প্রকাশিত শব্দ নিরন্তর কাগজে আমার একটি কবিতা । এটি সম্পাদনা করেন নীহার দেবনাথ ! 




Sunday, February 26, 2023



ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত মনন স্রোত কাগজে আমার একটি কবিতা । এটি সম্পাদনা করেন চিরশ্রী দেবনাথ ।