ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত 'কীর্ণকাল' কাগজ সম্পাদনা করেন চিরশ্রী দেবনাথ । এই সংখ্যায় পড়ুন আমার একটি কবিতা ।
পলকা মেঘের ঘরবাড়ি
প্রতি রাতে ছদ্মবেশে থাকি সকলেই
রাত-ভোর জানালায় অনন্ত প্রতীক্ষার মানুষ
মূর্তিগুলি
ষোলতলা ইমারত, সর্বোচ্চ শিখর থেকে
ঝরে পড়ে সহস্র কাঙালপনা!
একে একে গুহার ছায়াদেয়ালে
পর্যাপ্ত সরীসৃপ ভরে উঠলে
ব্রাত্য সকলেই পাইপলাইন বেয়ে নামে ভূগর্ভ মন্ডলে
তাঁদের এক রূপকথার দুনিয়া আছে
নেতা, হাকিম, চতুর, গোবেচারা
সকল পেশার সমাহারে
যারা অভিনেতা শুধু তারাই ক্রমে খুলে রাখছে
আত্ম-সচেতনতা, শিল্পবুদ্ধিহীন নিরেট মাথাটুকু
ফ্ল্যাটবাড়ির নির্জীব মোহনায় বসে ক্ষুদার ঈশ্বর
অপলক চেয়ে থাকে অমৃত-মন্থন পানে-
সভ্য বিনয়ী সংযত কুকুর সকলেই
সুগভীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে বসে সর্বহারাদের
পাশে
বাসস্থানের কলেবর বেড়েছে, পরিসর ফেঁপে উঠছে
ক্রমে
শুধু তীব্র লজ্জাকে উপেক্ষা করে
মানুষের খোলা বুক সংকুচিত হয়ে চলেছে
বাঁধ ভাঙ্গা এলইডি আলো
আলোকের সমূহ বন্যায় ভাসে ইমারত
শুধু অনন্ত প্রতীক্ষার মানুষগুলি রাতভর
জানালায়
দুহাতে অন্ধকার চেটেপুটে খায়
দুহাত দিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মাটির ওপর
বড় নিদারুন সেই পড়া, সিঁদুরে মেঘের ভয়
অসংখ্য দমকল মজুত করি আমরা প্রতিদিন
খুঁজে চলি একটি আপাত বিশ্বাসী কাঁধ
যেখানে মাথা, মুখ, হাত আলগোছে নামিয়ে রাখা
যায়!
**************